ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া’র বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া’র বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

গত ২১শে সেপ্টেম্বর, রবিবার, সিডনির গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার ১১তম বার্ষিক সাধারণ সভা ও ২০২৫-২০২৬ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নার্গিস বানুর সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। বিপুল সংখ্যক সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে সভাপতি কামরুল মান্নান আকাশের সভাপতিত্বে শুরু হয় বার্ষিক সাধারণ সভা। তিনি উপস্থিত সদস্যদের কাছে সংগঠনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল মেধাবী ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন।

সাধারণ সম্পাদক লিংকন শফিকউল্লাহ গত এক বছরের কর্মকাণ্ডের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং গত বছরের বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন। তা নিয়ে আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এরপর সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ হালিমুসসান বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন, যা অনুমোদিত হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে সাধারণ সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, তাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয় এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।

সভাপতি কামরুল মান্নান আকাশ শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “আপনাদের উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহণই পারে আমাদের এই সংগঠনটিকে আরও গতিশীল ও অর্থবহ করে তুলতে। এখানে দলীয় রাজনীতি ও ধর্মীয় ভেদাভেদের কোনো স্থান নেই। আমাদের একটাই পরিচয়— আমরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একই মায়ের সন্তান। আমাদের সংগঠনের আসল শক্তি হচ্ছে আমাদের ঐক্য। যদি আমরা সবাই আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করি তবে ভবিষ্যতে আরও বড় অর্জন সম্ভব।”

তিনি সকল বিভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি কার্যনির্বাহী পরিষদের সকল সদস্যের নিরলস পরিশ্রম ও অবদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সাধারণ সম্পাদক লিংকন শফিকউল্লাহ তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন— বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, বাংলা নববর্ষ উদযাপনসহ ক্রিকেট ম্যাচ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন ২০২৫ এবং প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পূর্তি উদযাপন ছিল একটি বড় সাফল্য। সংগঠনের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী, আর্থিক সহায়তা ও গবাদিপশু কিনে দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, গত দুই বছরে শতাধিক নতুন সদস্য যোগদান করেছে এবং বর্তমানে মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ছয় শত।

এরপর সভাপতি নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যারিস্টার আবদুল লতিফ শিকদার, সহকারী নির্বাচন কমিশনার ড. তুষার দাশ এবং কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদের কাছে দায়িত্ব অর্পণ করেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কার্যনির্বাহী কমিটির একুশটি পদের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করা হয়েছিল এবং যাচাই-বাছাই শেষে সবগুলো বৈধ ঘোষণা করা হয়। যেহেতু কোনো পদে একাধিক প্রার্থী ছিলেন না, তাই ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। নির্বাচন কমিশন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একুশজনকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন এবং ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।

২০২৫-২০২৬ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ:

  • সভাপতি – কামরুল মান্নান আকাশ
  • সহ-সভাপতি (১) – গোলাম মওলা
  • সহ-সভাপতি (২) – এম. এ. আহসানুল হাদি
  • সাধারণ সম্পাদক – লিংকন শফিকউল্লাহ
  • সহযোগী সাধারণ সম্পাদক – বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী
  • কোষাধ্যক্ষ – জাহিদ মাহমুদ
  • সাংস্কৃতিক সম্পাদক – সাকিনা আক্তার
  • প্রকাশনা সম্পাদক – নুসরাত হুদা কান্তা
  • শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক – সেলিম মমতাজ
  • ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সম্পাদক – নার্গিস বানু
  • ক্রীড়া সম্পাদক – হায়াত মাহমুদ

কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ: তানিয়া ফারজানা, খায়রুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ নাজমুল হক, জুবায়ের মিয়া, শুভ্র প্রকাশ চৌধুরী, দিবাকর সমাদ্দার, মো. শফিকুল আলম, নুসরাত জাহান স্মৃতি, নাফিস আহমেদ খন্দকার এবং এ এস এম হালিম উল্লাহ।

সভাপতি কামরুল মান্নান আকাশ বর্তমান কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা করেন এবং নতুন কমিটির কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করেন। পুনঃনির্বাচিত সভাপতি হিসাবে তিনি আবারও দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একে একে সকল সদস্যকে লাল-সবুজ উত্তরীয় পরিয়ে অভিনন্দিত করেন। তিনি বলেন, নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি সংগঠনকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা এবং নবীনদের সাহস ও উদ্যম একসাথে কাজ করবে এই সংগঠনকে সমৃদ্ধ করতে।

দুপুরের খাবারের পর সিডনির জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মাসুদ মিথুন ও রুমানা হক সঙ্গীত পরিবেশন করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তাদের সুরেলা পরিবেশনা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।

সবশেষে সভাপতি কামরুল মান্নান আকাশ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিকাল পাঁচটায় আনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।