বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে উত্তাল সিডনি । ২৪ সংগঠনের প্রতিবাদ সমাবেশ 

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে উত্তাল সিডনি । ২৪ সংগঠনের প্রতিবাদ সমাবেশ 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : ৪ জুলাই শুক্রবারে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর সাম্প্রতিক হামলা, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অব্যাহত জুলুম ও অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সিডনির হ্যাইড পার্কের প্রাণকেন্দ্রে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার ২৪ সংগঠন মানববন্ধন করে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং অবিলম্বে বিচার দাবি করে। 

প্রবাসী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত অস্ট্রেলিয়ান অ্যালায়েন্স ফর রেস্টোরেশন অব মাইনরিটি রাইটস ইন বাংলাদেশ (AARMMB) এই সমাবেশের আয়োজন করে। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বহন করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এই কর্মসূচিতে। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন। মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে হ্যাইড পার্ক।

প্রতিবাদের শুরুতে AARMMB-এর অন্যতম পরিচালক অমল দত্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের পটভূমি, উদ্দেশ্য এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিবরণ তুলে ধরেন। সংগঠনটির অন্তর্ভুক্ত ২৪টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন- ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন বাংলাদেশে যেন বন্ধই হচ্ছে না। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী- সব সম্প্রদায়ের ওপর পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ এবং দমন-পীড়ন চলছে সরকারের মদদে এবং প্রশাসনের চূড়ান্ত নিষ্ক্রিয়তায়।

তারা আরও জানান, স্বাধীনতার সময় হিন্দু জনগোষ্ঠী ছিল প্রায় ৩০ শতাংশ; বর্তমানে তা এক-তৃতীয়াংশেও নেই। এর পেছনে রয়েছে ধারাবাহিক নির্যাতন, বিচারহীনতা এবং রাষ্ট্রীয় অবহেলা। বক্তারা বলেন, সম্প্রতি দুর্গা মন্দির ভাঙচুর, গাবতলীতে কুমার লালমোহনের শিশু পুত্র রিসুন্দরের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, মুরাদনগরে হিন্দু নারী ধর্ষণ এবং ভিডিও ভাইরাল করার মতো ঘটনাগুলো সরকারের ইন্ধনে এবং প্রশাসনের প্রশ্রয়ে ঘটছে- এবং এগুলোকে স্পষ্টভাবে জাতিগত নিধনের অংশ বলে মনে করেন তারা।

তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একটি ‘সভ্য ও দায়বদ্ধ’ সরকার কীভাবে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে নীরব থাকতে পারে? আন্তর্জাতিক বার্তাবাহক হিসেবে AARMMB অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিবেকবান দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে- বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই মানববন্ধনে AARMMB-এর চেয়ারপার্সন সুরজিৎ রায় সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সহনশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে:

১১ দফা দাবি (সংক্ষেপে):

১. ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে মুবি ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার।

২. কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু নারী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

৩. ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে রিসুন্দর ও তাঁর পরিবারকে হামলার ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

৪. হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও মানবাধিকার কর্মীদের উপর হামলা বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

৫. সংখ্যালঘু হামলার পূর্ণ তদন্ত, নিরপেক্ষতা ও দায়ীদের বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে সম্পন্ন করা।

যোগাযোগ: afermb24@gmail.com